ঢামেকে কুকুরের জাত বলে গালিগালাজ করে এনেসথেসিওলজি ও সহকর্মী চিকিৎসকদের : ডা. শামসুল ইসলাম খান

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা.মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম খানের অশালীন ও অপমানজনক মন্তব্যের প্রতিবাদে দেড় ঘণ্টা রুটিন অপারেশন বন্ধ রাখেন অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগে চিকিৎসকরা। পরে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালকের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে চিকিৎসকরা কর্মক্ষেত্রে ফিরে যান।

 

সোমবার (০৩ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টায় পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রুটিন অপারেশন বন্ধ রাখে অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসকরা ১০টার দিকে হাসপাতাল পরিচালকের সঙ্গে একটি বৈঠক শেষে কাজে ফিরেন তারা।

একটি সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মেডিকেলের এনেসথেসিওলজি বিভাগের ফেজ-এ রেসিডেন্ট ডা.নুসরাত নওশিন নওরিন গত (১নভেম্বর) নিউরো সার্জারিবিভাগে হোয়াইট ইউনিট’-এ যোগদানের পর ইউনিট প্রধান ডা.শামসুল ইসলাম খানে সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি এনেসথেসিওলজি বিভাগের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের নিয়ে একের পর এক অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও অপমানজনক মন্তব্য করেন।

সোমবার (০৩ নভেম্বর) সকালে এনেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসকরা একযোগে প্রতিবাদে অংশ নেন। ডা. মঞ্জুরুল ইসলাম নামের এক সহকর্মী জানান, সকাল ৮টা থেকে আমরা সবাই প্রতিবাদ জানাই এবং প্রিন্সিপাল স্যার ও ডিরেক্টর স্যারের কাছে স্মারকলিপি জমা দিই। সেখানে এনেস্থেসিয়া সোসাইটি নেতারা নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধানসহ ঢাকা মেডিকেলের সিনিয়র শিক্ষক ও চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।

সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম খান জানান, সভায় সবাই একমত হয়ে ডা.শামসুল ইসলাম খানকে ঢামেকের সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরিচালক ও প্রিন্সিপাল মহোদয় বিষয়টি উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য সচিব এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন, যাতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। একই সঙ্গে বিএমডিসিতে তার নিবন্ধন বাতিলের আবেদন করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া এনেস্থেসিয়া সোসাইটির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়, তাকে সরকারি- বেসরকারি কোনো অপারেশন থিয়েটারে সহযোগিতা করা হবে না।

এদিকে, প্রায় দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রুটিন অপারেশন পুনরায় শুরু হয়। তবে ইমারজেন্সি অপারেশন কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছিল বলে জানা গেছে।

এসব প্রসঙ্গে জানতে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. আসাদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালটির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। দ্রুত চিকিৎসায় ১০ মিনিটের ‘গ্রিন চ্যানেল’ জরুরী বন্ধ থাকবে অন্য সেবা
অর্থ নয়, আত্মতৃপ্তিই চিকিৎসার আসল প্রাপ্তি

আরো জানান যায়, ডা. নওশিনে অভিযোগ- পত্র অনুযায়ী,(১ নভেম্বর) তিনি একাডেমিক কারিকুলাম অনুযায়ী নিউরোসার্জারি বিভাগের হোয়াইট ইউনিটে যোগ দেন। যোগদানের পর সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম খানের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি ব্যক্তিগত বিভাগীয়ভাবে অপমানজনক ভাষায় মন্তব্য করতে থাকেন।

অভিযোগে বলা হয়, এনেসথেসিওলজি স্টদের ‘কুকুরের জাত’ বলে বারবার সম্বোধন করেন এবং নির্দিষ্ট চিকিৎসকদের নাম উল্লেখ করে গালিগালাজ করেন। এমনকি সহকর্মী চিকিৎসক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়েও অশোভন মন্তব্য করেন।

অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ রয়েছে, ডা. শামসুল ইসলাম খান এনেসথেসিওলজি পেশাকে ‘নিম্নমানের ও নির্ভরশীল সাবজেক্ট’ বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন এবং এক পর্যায়ে ব্যক্তিগতভাবে অপদস্থ করার মতো ভাষা ব্যবহার করেন। এ ঘটনায় সহকর্মীদের তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়, যা শেষ পর্যন্তআজকের প্রতীকী কর্মবিরতিতে রূপ নেয়।

ঢামেকে কুকুরের জাত বলে গালিগালাজ করে এনেসথেসিওলজি ও সহকর্মী চিকিৎসকদের : ডা. শামসুল ইসলাম খান

ঢামেকে কুকুরের জাত বলে গালিগালাজ করে এনেসথেসিওলজি ও সহকর্মী চিকিৎসকদের : ডা. শামসুল ইসলাম খান

আপডেট : ১১:৫৮:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা.মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম খানের অশালীন ও অপমানজনক মন্তব্যের প্রতিবাদে দেড় ঘণ্টা রুটিন অপারেশন বন্ধ রাখেন অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগে চিকিৎসকরা। পরে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালকের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে চিকিৎসকরা কর্মক্ষেত্রে ফিরে যান।

 

সোমবার (০৩ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টায় পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রুটিন অপারেশন বন্ধ রাখে অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসকরা ১০টার দিকে হাসপাতাল পরিচালকের সঙ্গে একটি বৈঠক শেষে কাজে ফিরেন তারা।

একটি সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মেডিকেলের এনেসথেসিওলজি বিভাগের ফেজ-এ রেসিডেন্ট ডা.নুসরাত নওশিন নওরিন গত (১নভেম্বর) নিউরো সার্জারিবিভাগে হোয়াইট ইউনিট’-এ যোগদানের পর ইউনিট প্রধান ডা.শামসুল ইসলাম খানে সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি এনেসথেসিওলজি বিভাগের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের নিয়ে একের পর এক অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও অপমানজনক মন্তব্য করেন।

সোমবার (০৩ নভেম্বর) সকালে এনেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসকরা একযোগে প্রতিবাদে অংশ নেন। ডা. মঞ্জুরুল ইসলাম নামের এক সহকর্মী জানান, সকাল ৮টা থেকে আমরা সবাই প্রতিবাদ জানাই এবং প্রিন্সিপাল স্যার ও ডিরেক্টর স্যারের কাছে স্মারকলিপি জমা দিই। সেখানে এনেস্থেসিয়া সোসাইটি নেতারা নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধানসহ ঢাকা মেডিকেলের সিনিয়র শিক্ষক ও চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।

সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম খান জানান, সভায় সবাই একমত হয়ে ডা.শামসুল ইসলাম খানকে ঢামেকের সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরিচালক ও প্রিন্সিপাল মহোদয় বিষয়টি উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য সচিব এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন, যাতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। একই সঙ্গে বিএমডিসিতে তার নিবন্ধন বাতিলের আবেদন করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া এনেস্থেসিয়া সোসাইটির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়, তাকে সরকারি- বেসরকারি কোনো অপারেশন থিয়েটারে সহযোগিতা করা হবে না।

এদিকে, প্রায় দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রুটিন অপারেশন পুনরায় শুরু হয়। তবে ইমারজেন্সি অপারেশন কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছিল বলে জানা গেছে।

এসব প্রসঙ্গে জানতে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. আসাদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালটির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। দ্রুত চিকিৎসায় ১০ মিনিটের ‘গ্রিন চ্যানেল’ জরুরী বন্ধ থাকবে অন্য সেবা
অর্থ নয়, আত্মতৃপ্তিই চিকিৎসার আসল প্রাপ্তি

আরো জানান যায়, ডা. নওশিনে অভিযোগ- পত্র অনুযায়ী,(১ নভেম্বর) তিনি একাডেমিক কারিকুলাম অনুযায়ী নিউরোসার্জারি বিভাগের হোয়াইট ইউনিটে যোগ দেন। যোগদানের পর সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম খানের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি ব্যক্তিগত বিভাগীয়ভাবে অপমানজনক ভাষায় মন্তব্য করতে থাকেন।

অভিযোগে বলা হয়, এনেসথেসিওলজি স্টদের ‘কুকুরের জাত’ বলে বারবার সম্বোধন করেন এবং নির্দিষ্ট চিকিৎসকদের নাম উল্লেখ করে গালিগালাজ করেন। এমনকি সহকর্মী চিকিৎসক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়েও অশোভন মন্তব্য করেন।

অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ রয়েছে, ডা. শামসুল ইসলাম খান এনেসথেসিওলজি পেশাকে ‘নিম্নমানের ও নির্ভরশীল সাবজেক্ট’ বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন এবং এক পর্যায়ে ব্যক্তিগতভাবে অপদস্থ করার মতো ভাষা ব্যবহার করেন। এ ঘটনায় সহকর্মীদের তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়, যা শেষ পর্যন্তআজকের প্রতীকী কর্মবিরতিতে রূপ নেয়।